বর্তমানে বয়স বেড়ে যাওয়া মানেই যেন হাঁটুতে ব্যথা। তবে শুধু বয়সই নয়—দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, অতিরিক্ত ওজন, আঘাত, বা বাতজনিত রোগ থেকেও দেখা দেয় হাঁটুর ব্যথা। অনেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন, কিন্তু কিছু প্রাকৃতিক ঘরোয়া টোটকা মেনে চললে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমানো সম্ভব— এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
হাঁটুর ব্যথার কারণ কী কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নিচের সমস্যাগুলি হাঁটু ব্যথার অন্যতম কারণ:
অস্টিওআর্থ্রাইটিস (হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যা)
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (জোড়ার প্রদাহ)
চোট বা দুর্ঘটনার পরবর্তী প্রভাব
ওজনজনিত চাপ বা অনিয়মিত হাঁটাচলা
শরীরে ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি
ঘরোয়া টোটকাগুলি যা হাঁটুর ব্যথা উপশমে সহায়ক হতে পারে:
১. সরষে তেল ও রসুনের গরম মালিশ
গরম সরষে তেলে কয়েক কোয়া রসুন দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হয়ে আসলে ব্যথার জায়গায় ভালোভাবে মালিশ করুন।
*এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও পেশি শিথিল করে।
২. হলুদ দুধ (গোল্ডেন মিল্ক)
প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ হলুদ মিশিয়ে খেলে প্রদাহ কমে ও ব্যথায় উপকার মেলে।
* হলুদের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ‘কার্কিউমিন’।
৩. মেথি বাটা বা পেস্ট ব্যবহার
ভেজানো মেথি বেটে হাঁটুর উপরে পেস্টের মতো করে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
এটি ব্যথা ও জোড়ার ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
৪. ইপসম সল্ট স্নান বা সেঁক
এক বালতি কুসুম গরম জলে এক কাপ ইপসম সল্ট মিশিয়ে হাঁটু ডুবিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট।
* ম্যাগনেসিয়াম সল্ট পেশি ও জয়েন্টের ব্যথা কমাতে পরিচিত।
৫. আদা ও তুলসী পাতার ক্বাথ (Herbal Tea)
আদা, তুলসী, দারচিনি দিয়ে তৈরি ক্বাথ দিনে ১–২ বার পান করলে হাঁটুর ব্যথা ও গাঁটে গাঁটে ব্যথা কমে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
আয়ুর্বেদ চিকিৎসক জানাচ্ছেন —
“প্রচলিত ঘরোয়া টোটকার অনেক উপাদান যেমন হলুদ, আদা, মেথি এগুলি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যানালজেসিক। তবে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ
যদি হাঁটুর ব্যথা দীর্ঘদিন থাকে বা ফুলে যায়, তাহলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডায়াবেটিস বা রক্তচাপজনিত রোগীদের যেকোনো টোটকা ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের অনুমতি নেওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment